মোঃশাহেদ আলী,ইটনা (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
প্রতি বছর শীত কাল আসলেই শরু হয় বোরো চাষাবাদ। প্রচন্ড ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশার মাঝে হাওড় অঞ্চলের কৃষকরা এবার বোরো চাষাবাদ সম্পন্ন করেছে। তবে এবার বোরো চাষে অন্যান্য বছরের তুলনায় খরচ পরেছে দ্বিগুন। কারণ শ্রমিক সংকটের পর অতিরিক্ত ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বোরো চাষিদের কষ্টের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন হাওড়ে বোরো চাষ করেছে কৃষক। বর্তমানে হাওড় অঞ্চলে ইটনা উপজেলায় ৯টি ইউনিয়নের কৃষক আর্থিক সংকটে আছে। উৎপাদিত বোরো ফসলের এখন পরিচর্যা সার কীটনাশক জমিতে। প্রয়োগ সহ সেচ ব্যবস্থায় অর্থের প্রয়োজন। তাই কৃষকদের ফসল উৎপাদনে সহযোগীতার জন্য স্বল্প সুদে দ্রুত সময়ে কৃষি ঋণ দেওয়া জরুরি প্রয়োজন বলে বিজ্ঞ মহল মনে করে। কারণ হাওড় অঞ্চলে ইটনা উপজেলার বেশির ভাগ লোক অতি দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষি। অধিকাংশ পরিবারের আয়ের উৎস্য হল কৃষি।হাওরের কৃষকরা ফসল উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ফসল দেশের চাহিদা পূরণে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে। আর্থিক সংকট কাটাতে না পারলে কৃষকরা চলতি বোরো মৌসুমে ফসল উৎপাদনে বাধা গ্রস্ত হতে পারে বলে আশংকা এলাকাবাসীর। চলতি বোরো মৌসুমে হাওড় অঞ্চলের ইটনা উপজেলার বিভিন্ন হাওড়ের ফসল অনেকটাই ভাল হয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে বাম্পার ফসলের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। হাওড় এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়,এ বছর তারা বোরো হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করেছে। যেমন হীরা ১৯, হীরা ৪, সুপার গোল্ড, আফতাব ও এসিআই গ্রুপের উন্নত জাতের হাইব্রিড ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া এলাকার দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের মাঝে সরকারি ভাবে হাইব্রিড বোরো বীজ ও বিনামূল্যে সার কৃষি প্রণোদনা হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে বোরো বীজ ও সার পাওয়ায় বোরো চাষে কৃষকরা অনেকটা উৎসাহিত হয়েছে। এই এলাকার অধিকাংশ কৃষক দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষি। সরকারি এই প্রণোদনায় কৃষকদের জন্য সহায়ক হয়েছে।
ইটনা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে জানা যায়, এইবার উপজেলায় ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু ধানের বাজার ভাল হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে চাষাবাদ করেছে কৃষকরা। এমন ধারণা করা হচ্ছে বেসকারি ভাবে। চাষাবাদকৃত বোরো ফসল পরিচর্যা সেচ ও সার কীটনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছে এলাকার কৃষকরা। তবে বোরো চাষের খরচ বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েছে তারা। প্রতি একরে বোরো চাষে খরচ বেড়ে দাড়িয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে বোরো ফসলের জমির অবস্থান খুবই ভাল। চাষাবাদকৃত বোরো ফসলের অবস্থান দেখে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফসলের অবস্থা দেখে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় তাহলে বোরো উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ও বেশি ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
ইটনা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি অফিসার উজ্জ্বল সাহা, এসওপিপিও মোঃ মাহাবুব ইকবাল, কাইরুল ইসলাম অফিস সহকারী ও রহমত উল্লা উপসহকারী তারা সকলে এলাকার কৃষকদেরকে চাষাবাদের নিয়মকানুন কীটনাশক সার ইত্যাদি ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :