কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১১ টি দান বাক্সে এবার মিলল রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার,৬৮৭ টাকা।শনিবার বিকাল ৫ টা পর্যন্ত টানা ৮ ঘন্টা গণনা শেষে এ টাকা পাওয়া গেছে।
৪ মাস ১১ দিনে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে ১১ টি দানবাক্সে এবার মিললো সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমান ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা।এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের রূপালী ব্যাংকে পাগলা মসজিদের একাউন্টে স্থিতি রয়েছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭২ হাজার ৫৭৬ টাকা।
এর আগে শনিবার সকাল ৭ টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক জেসমিন আক্তারের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।
জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে রয়েছে ১০ টি দানবাক্স ও ১ টি ট্রাঙ্ক।যেগুলো সাধারণত তিন মাস পরপর খোলা হয়।এবার খোলা হয়েছে ৪ মাস ১১ দিন পর।
পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল ৭ টার দিকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে ১০ টি দানবাক্স ও ১ টি ট্রাঙ্ক খোলা হয়।এসব দানবাক্সে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। গণনা শেষে মোট টাকার পরিমাণ জানা যাবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়।টাকা গণনা শেষে ব্যাংকে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
টাকা গণনার কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মী ছাড়াও আছেন মাদ্রাসার ২৮৫ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মী, মসজিদ কমিটির ৩৪ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য।
দানবাক্স খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। তাদের মধ্যে অনেকে আসেন দূরদুরান্ত থেকে।
এর আগে ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর সকালে মসজিদটির ১০ টি দানবাক্স খুলে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। সে সময় গণনা শেষে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও পাওয়া যায় বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা। তখন তিন মাস ১৩ দিনে দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিল রেকর্ড পরিমাণ এই অর্থ।
মসজিদটিতে নিয়মিত হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগলের পাশাপাশি নানা ধরণের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষ।
জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমির ওপর পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। সম্প্রসারণের পর মসজিদের বর্তমানে আওতাভূক্ত জমির পরিমাণ তিন একর ৮৮ শতাংশ।
পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্র জানিয়েছে, মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। এছাড়া করোনাকালে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেওয়া হয়েছিল এ দানের টাকা থেকে।
জানা যায়, মসজিদটিকে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৩০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
সম্পাদক প্রকাশকঃ এম এ জলিল
ম্যানেজিং এডিটরঃ আশরাফুল ইসলাম তুষার
মফস্বল এডিটরঃ ইমরান হোসেন
© Pratidinersomoy