করিমগঞ্জে মইছ উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, খুনিদের ফাঁসির দাবি-


Ashraful Islam প্রকাশের সময় : মার্চ ১৭, ২০২৫, ৫:১০ অপরাহ্ন /
করিমগঞ্জে মইছ উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, খুনিদের ফাঁসির দাবি-

 

শারীরিক প্রতিবন্ধী শুঁটকি ব্যবসায়ী মইছ উদ্দিন প্রতিদিনের মতো ব্যবসার কাজে বের হন। তবে সেদিন আর ফেরা হয়নি তার। ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে অপহরণকারী চক্র মোবাইল ফোনে ডেকে এনে তাকে অপহরণ করে। পরে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে গোপন আস্তানায় আটকে রাখে এবং পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না পেয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে তার মরদেহ ঢাকার ধামরাই থানার গোপাল কৃষ্ণপুর গ্রামে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়।

১৪ ফেব্রুয়ারি ধামরাই থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। নিহত মইছ উদ্দিন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন গৌরারগোপ গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে শুঁটকি এনে কিশোরগঞ্জের বড়বাজারে বিক্রি করতেন।

বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান-

১৭ ফেব্রুয়ারি হত্যার প্রতিবাদে পাঁচ-ছয়শতাধিক বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষ করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। পরে করিমগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কিরাটন ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সোলেমান সওদাগর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন জীবন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এরশাদ মিয়া ও নিহতের ভাই ওয়াসিম উদ্দিন বক্তব্য রাখেন। বক্তারা অবিলম্বে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

গ্রেফতার ও আইনি পদক্ষেপ-

মইছ উদ্দিন হত্যার ঘটনায় তার ভাই ওয়াসিম উদ্দিন করিমগঞ্জ থানায় ৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড, ১৮৬০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশের তদন্তে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়।

১৩ মার্চ কক্সবাজারের পেকুয়া থেকে রুবেল (৩০) এবং রাজধানীর তেজগাঁও থানার নাখালপাড়া থেকে মূল পরিকল্পনাকারী জাহেদ (৪২) কে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত জাহেদ করিমগঞ্জ উপজেলার বারঘরিয়া ইউনিয়নের বারবার্তা গ্রামের মৃত হোসেন আলী ওরফে উছেনের ছেলে। রুবেল জাহেদের ভাগিনা এবং সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পরিবারের দাবি-

নিহতের ভাই ওয়াসিম উদ্দিন ও ভাতিজা মোস্তাকিম জানান, মূল হোতা জাহেদ দীর্ঘদিন ধরে মইছ উদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় গড়ে তোলে এবং সুযোগ বুঝে অপহরণ করে হত্যা করে। তারা জাহেদ ও তার সহযোগী রুবেলের ফাঁসি দাবি করেন।

করিমগঞ্জ থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ মাহবুব মোরশেদ জানান, এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মূল অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওয়াসিম বিশ্বাস জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের শনাক্তে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দাবি ও প্রত্যাশা-

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর একটাই দাবি—এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন জঘন্য অপরাধ করার সাহস না পায়।