দুপুর পর্যন্ত পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিললো ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা,চলছে গণনা


Ashraful Islam প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১২, ২০২৫, ৬:৫৫ পূর্বাহ্ন /
দুপুর পর্যন্ত পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিললো ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা,চলছে গণনা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া ২৮ বস্তা টাকার মধ্যে ৩ ঘণ্টায় ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা গণনা করা হয়েছে। এখনও চলছে গণনার কাজ।

শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে রূপালী ব্যাংকের এজিএম মোহাম্মদ আলী হারিসী জানান, সকাল ৭টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। পরে বস্তায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তালার মেঝেতে এনে সকাল ৯টায় গণনা শুরু করা হয়। সেই হিসাবে ৩ ঘণ্টায় ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা গণনা করা হয়েছে। এই টাকাগুলো নিরাপত্তার মাধ্যমে রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখায় পাঠানো হচ্ছে।
মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পার্শ্ববর্তী জামিয়া এমদাদিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী, রূপালী ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ চার শতাধিক জনের একটি দল এই ২৮ বস্তা টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছে। এবার রমজানের জন্য দানবাক্স খোলার সময় পার হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত একটি টিনের বাক্স বাড়ানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার সকাল ৭ টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক জেসমিন আক্তারের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে রয়েছে ১০ টি দানবাক্স ও ১ টি ট্রাঙ্ক।যেগুলো সাধারণত তিন মাস পরপর খোলা হয়।এবার খোলা হয়েছে ৪ মাস ১১ দিন পর।
পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল ৭ টার দিকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে ১০ টি দানবাক্স ও ১ টি ট্রাঙ্ক খোলা হয়।এসব দানবাক্সে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। গণনা শেষে মোট টাকার পরিমাণ জানা যাবে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়।টাকা গণনা শেষে ব্যাংকে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।

টাকা গণনার কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মী ছাড়াও আছেন মাদ্রাসার ২৮৫ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মী, মসজিদ কমিটির ৩৪ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য।

দানবাক্স খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। তাদের মধ্যে অনেকে আসেন দূরদুরান্ত থেকে।

এর আগে ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর সকালে মসজিদটির ১০ টি দানবাক্স খুলে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। সে সময় গণনা শেষে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও পাওয়া যায় বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা। তখন তিন মাস ১৩ দিনে দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিল রেকর্ড পরিমাণ এই অর্থ।

মসজিদটিতে নিয়মিত হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগলের পাশাপাশি নানা ধরণের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষ।

জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমির ওপর পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। সম্প্রসারণের পর মসজিদের বর্তমানে আওতাভূক্ত জমির পরিমাণ তিন একর ৮৮ শতাংশ।