বাজিতপুরে ঐতিহ্যবাহী দুটি স্টেশন থেকে ৬৪টি টিকিটের বরাদ্দ কমিয়েছে রেলওয়ে


Ashraful Islam প্রকাশের সময় : মার্চ ১১, ২০২৫, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন /
বাজিতপুরে ঐতিহ্যবাহী দুটি স্টেশন থেকে ৬৪টি টিকিটের বরাদ্দ কমিয়েছে রেলওয়ে

মোঃ খসরু মিয়া বাজিতপুর,( কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দুটি রেলস্টেশন সরারচর ও বাজিতপুর। কিশোরগঞ্জ থেকে সরারচর-বাজিতপুর হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলাচল করে এগারসিন্ধুর প্রভাতী, এগারসিন্ধুর গৌধুলী এবং কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস। উক্ত দুটি স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাতায়াতকারী যাত্রীদের কাছে টিকেট যেন সোনার হরিণ। নিয়মিত যাত্রীদের একটি টিকেট পেতে করতে হয় রীতিমতো যুদ্ধ। এ দুটি স্টেশন থেকে বাজিতপুর, নিকলী, কটিয়াদি, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন থানাসমূহ থেকে প্রচুর পরিমাণ যাত্রী ঢাকার উদ্দেশে যাতায়াত করেন প্রতিদিন।
যাত্রীদের চাপে দীর্ঘদিন ধরে স্টেশন দুটি যেখানে টিকিট সংকটে ভুগছে সেখানে উল্টো কান্ড ঘটিয়ে বসলো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সরারচর ও বাজিতপুর স্টেশনের জন্য পূর্বের বরাদ্দ টিকিট থেকে সরারচর থেকে ২৬টি এবং বাজিতপুর স্টেশন থেকে ৩৮টি টিকেটের বরাদ্দ কমিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
সরারচর স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, এগারসিন্ধুর প্রভাতির সরারচব থেকে প্রথম সিট (কেবিন)-এর ৩টি বরাদ্দ বাতিল, শোভন চেয়ার ১৫টি থেকে কমিয়ে ১০টি, শোভন ৭৫টি থেকে কমিয়ে আছে ৬০টি অর্থাৎ ১৫টি টিকিট কমিয়ে ফেলেছে। সব মিলিয়ে এগারসিন্ধুর প্রভাতী সরারচর থেকে ঢাকার মোট ২৩টি টিকেট কমিয়ে ফেলা হয়েছে এবং এগারসিন্ধুর গোধূলির প্রথম সিট (কেবিন)-এর ৩টি বরাদ্দ বাতিল, শোভন ক্লাসের টিকিট পূর্বে ছিল ৬৫টি বর্তমানে আছে ৬০টি, ৫টি কমানো হয়েছে। শোভন চেয়ার ৫টি থেকে বাড়িয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০টি, ৫টি বেড়েছে। তবে এ স্টেশন থেকে প্রথম চেয়ার টিকিট প্রভাতী এবং গোধূলীর জন্য পূর্বে ছিল ৪টি বর্তমানেও আছে ৪টি। সরারচর স্টেশন থেকে সর্বমোট প্রভাতী ও গোধূলী মিলিয়ে ২৩+৩=২৬টি টিকেট কমানো হয়েছে।
এদিকে বাজিতপুর স্টেশন (ভাগলপুর) স্টেশন থেকে এগারসিন্ধুর প্রভাতীর প্রথম চেয়ার ৬টি, কেবিন ৩টি, শোভন চেয়ার ১০টি এবং শোভন কমানো হয়েছে ১৫টি। এগারসিন্ধুর প্রভাতী ট্রেনের মোট ৩৪টি টিকিট কেটে নেয়া হয়েছে। এগারসিন্ধুর গোধূলীর প্রথম চেয়ার ৬টি, কেবিন ৩টি কেটে নেয়া হয়েছে। তবে শোভন চেয়ার পূর্বের সংখ্যায় ঠিক থাকলেও শোভন ক্লাসের ৫টি বৃদ্ধি করা হয়েছে। যোগ-বিয়োগ শেষে বাজিতপুর স্টেশন থেকে প্রভাতী এবং গোধুলী মিলিয়ে ৩৪+৪=৩৮টি টিকিট সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বাজিতপুর স্টেশনের জন্য আগে ছিল ডাবল কেবিন এখন সিঙ্গেল কেবিন বরাদ্দ হয়েছে।
এ স্টেশন দুটি থেকে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের কোনো সিটের সংখ্যা পরিবর্তন আনা হয়নি।
সরারচর থেকে থেকে নিয়মিত যাতায়াতকারী সোয়েব ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আমাদের একটি টিকিটের জন্য যুদ্ধ করতে হয়। অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপে এ স্টেশনে টিকিটের সংখ্যা বৃদ্ধির পরিবর্তে টিকিট কমিয়ে নেয়া খুবই দুঃখজনক।
বাজিতপুর স্টেশন থেকে নিয়মিত টিকেট কেটে যাতায়াতকারী মো. আশরাফ জানান, ১০ আগে ঘড়ির কাটা দেখে টিকিট কেটে রাখি। ১ মিনিট এদিক সেদিক হলে টিকিট পাইনা। বাজিতপুর স্টেশনটি জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাত্রীদের চাপও বেশি। এ স্টেশনে টিকিট বরাদ্দ না বাড়িয়ে উল্টো কমানোয় আমি হতাশা ব্যক্ত করছি।
মো. আমানুর রহমান নামে আরেকজন যাত্রী জানান, বাজিতপুর, সরারচর এবং কুলিয়ারচর এর কোন আসন কোন দিনই ফাঁকা থাকে না। তা সত্তে ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঐতিহ্যবাহী স্টেশনগুলোর আসন কেটে অন্য উপজেলায় নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে বাজিতপুর, সারারচর এবং কুলিয়ারচর বাসী মানববন্ধন করা অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে। না করলে রেলের এই উদাসীন মনোভাবের জন্য বাজিতপুর, কুলিয়ারচর ও সরারচরবাসি বৈষম্যের শিকার হবেন। অন্যান্য স্টেশনকে যদি সুবিধা দিতে হয় তাহলে ট্রেনগুলোর কোচ বৃদ্ধি করে তাদেরকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরারচর স্টেশন মাস্টার রৌকিশ বিশ্বাস বলেন কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করে নাই কোন কিছু জানতেও চাইনি এর বেশি আমি কিছু জানি না, বাজিতপুর স্টেশন মাস্টার নাজমুল ইসলাম বলেন আমাদের কাছে কোন কিছু জিজ্ঞেস করে নাই আমাদেরকে কাছ থেকে কোনকিছু জানতেও চাই নাই, কর্তৃপক্ষ তাছাড়া কাউন্টারে টিকেট তো অনেক আগেই বাদ দিয়ে দিছে এখন যা হয় সব অনলাইনে তো হয়।